আন্তর্জাতিক ডেস্ক 14 January, 2022 08:19 PM
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দেওয়া স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে বাংলাদেশ তাদের ব্যবহার করবে। আমাদের দেশে এটিকে আমরা তদবির বলি। দেশের স্বার্থে যেখানে তদবিরের প্রয়োজন হবে, সেখানেই সরকার তদবির চালাবে। দেশেও তো কাজ করতে গেলে অনেক সময় তদবির লাগে।
আজ (১৪ জানুয়ারি) শুক্রবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-বিআইএলআইএ’র ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে রাজধানীতে বিআইএলআইএ এবং এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ল প্রফেসরস-এএএলপি আয়োজিত ‘মহামারি চলাকালীন ও মহামারী পরবর্তী আইন ও আইনগত শিক্ষা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিআইএলআইএ’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন ড. মো. রহমত উল্লাহ এবং বিআইএলআইএ’র প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নতুন করে লবিস্ট নিয়োগের বিষয় বলতে পারব না। লবিস্ট নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের একটি সাধারণ প্র্যাকটিস। বাংলাদেশ ২০১৩-১৪ সালে লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছিল। ওরা কাজ করছে। ২০১৮ সালে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ প্রসঙ্গে আমি জানি না। তবে তাদের অধিকার আছে আইনি কাঠামোর অধীনে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার। বিএনপি বা অন্য যে কেউ এটি করুক এটা তাদের মাথাব্যথা। আমার না। সময়-সময় আমাদের অনেক ধরনের দুর্যোগ আসে। আমরা সেগুলো সমাধান করি। এখনো হয়ত একটা অসুবিধা আসছে। কিন্তু আমরা এটা সমাধান করতে পারব। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অনেক ধাক্কা আসে এবং সব গণতন্ত্রে অপূর্ণতা আছে। আমাদের কোথাও যদি কোনো ঘাটতি থাকে, দুর্বলতা থাকে, তবে অবশ্যই আমরা সেটা ঠিক করার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আমেরিকানরা পরিপক্ব জাতি। তারা দেখবে। যদিও র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলছে, গত কয়েক বছরে সন্ত্রাস কমেছে। এটা তাদের নিরপেক্ষ সমীক্ষা। সেগুলো নিয়ে তারা চিন্তাভাবনা করবে। পৃথিবীজুড়ে সন্ত্রাস দূর করা ও সন্ত্রাসীদের ধরা তাদের লক্ষ্য। মাদক ও মানব পাচার কমানো তাদের লক্ষ্য। র্যাব এগুলো সফলভাবেই করছে। এ কারণেই র্যাব জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। আমার মনে হয় সবাই এটা বুঝবে। তখন হয়ত অবস্থার পরিবর্তন হবে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় অঙ্গ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে যাতে করে আইনী শিক্ষা মহামারীর মধ্যে আইনের পরিবর্তিত কাঠামো ও কার্যাবলী প্রতিফলিত করতে পারে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট অকল্পনীয় দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নতুন আইনি ধারণা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের জরুরি বিধান জারি না করে নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলোকে সীমাবদ্ধ করা থেকে শুরু করে উদ্ভাবনী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কোভিড-১৯ মহামারী আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আচরণকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে বহুমুখী প্রভাব ফেলেছে। মানব ও মানব সমাজের এই আচরণগত ধরণ ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে। আইন ও আইনী শিক্ষা এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ।